চীনের নারীদের মধ্যে সম্প্রতি একটি অদ্ভুত ট্রেন্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে—‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’। নিজেদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ পরীক্ষা করতে এই কৌশল ব্যবহার করছেন অনেক নারী, জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
এই ট্রেন্ডে অংশ নিতে নারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে এমন ছবি বা ভিডিও তৈরি করেন, যেখানে দেখা যায় অপরিচ্ছন্ন পোশাকের এক গৃহহীন ব্যক্তি তাঁদের বাড়ি বা অফিসে অবস্থান করছে। এরপর সেই ছবি বা ভিডিও তাঁরা তাঁদের স্বামী বা প্রেমিককে পাঠান, যেন মনে হয় কোনো গৃহহীন ব্যক্তি সত্যিই ঘরে ঢুকে পড়েছে। এর মাধ্যমে তাঁরা সঙ্গীর প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ যাচাই করতে চান।
এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে গুগলের জেমিনি, মাইএডিটের ‘এআই রিপ্লেস’সহ বিভিন্ন টুল।
তবে এই প্র্যাঙ্ককে কেন্দ্র করে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। এক আইনজীবীর পরিবার এমন এক ঘটনায় পুলিশ ডাকতে বাধ্য হয়। আবার আনহুই প্রদেশে এক নারী এআই দিয়ে তৈরি ছবি পাঠিয়ে দাবি করেন, তাঁর ঘরে একজন গৃহহীন ব্যক্তি ঢুকে পড়েছে। বিষয়টি সত্যি ভেবে তাঁর স্বামী তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝতে পারে, ছবিটি আসলে এআই-নির্মিত।
পরে কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে ‘জনসম্পদের অপচয়’ বলে মন্তব্য করে এবং সেই নারীকে ‘ভয় ছড়ানোর অপরাধে’ অভিযুক্ত করে। চীনের জননিরাপত্তা প্রশাসন শাস্তি আইনে এমন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ১০ দিনের আটক ও প্রায় ৭০ ডলার জরিমানার বিধান রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক চীনা পুরুষ এই ট্রেন্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, “আপনারা কি সেই রাখাল ছেলের গল্প শুনেননি, যে নেকড়ে এসেছে বলে মিথ্যা বলত? যদি বারবার মিথ্যা সতর্কতা দেন, তাহলে সত্যি বিপদেও কেউ আপনাদের বিশ্বাস করবে না।” আরেকজন লিখেছেন,“এআই আমাদের জীবনে অনেক সুবিধা এনেছে, কিন্তু এটি আস্থার সংকটও বাড়াচ্ছে। প্ল্যাটফর্মগুলোর উচিত এআই-নির্মিত কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা।”
এই নতুন ‘এআই প্র্যাঙ্ক’ ট্রেন্ড এখন চীনে প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতা, ব্যক্তিগত সম্পর্কের আস্থা এবং ডিজিটাল দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


