logo
ads

ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প

যাপ্র আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশকাল: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১২ পি.এম
ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করতে প্রয়োজনে সেই দেশে স্থল অভিযান চালানোর হুমকি দিয়ে বলেছেন, এরপর ভেনেজুয়েলার ‘ভূখণ্ডই হবে পরবর্তী’ অভিযানের ‘লক্ষ্য'।

এর আগে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মার্কিন হুমকি অগ্রাহ্য করে ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘এই ভূমিকে কেউ ছুঁতে পারবে না।’ এ নীতিই এখন উদ্বেগ বাড়াচ্ছে—ভেনেজুয়েলা কি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রণক্ষেত্র হয়ে উঠবে?

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদক প্রবেশ ঠেকাতে চলমান অভিযানে এবার ভেনেজুয়েলার স্থলভাগকেও লক্ষ্যবস্তু হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘এবার ভূখণ্ডই হবে পরের লক্ষ্য।’ সামরিক অভিযানকে সমুদ্রসীমায় সীমাবদ্ধ না রেখে স্থলভাগেও সম্প্রসারণের ইঙ্গিত হিসেবে এই মন্তব্যকে দেখা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে কংগ্রেসকে আসন্ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে নির্দেশ দেন। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর কোনো বিবরণ না দিলেও ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীকে ভেনেজুয়েলাভিত্তিক তথাকথিত মাদকচক্রের স্থলভিত্তিক অবকাঠামোতেও আঘাত হানতে নির্দেশ দিতে পারেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘এবার ভূখণ্ডই হবে পরের লক্ষ্য।’ এরপর হেগসেথের দিকে ফিরেই তিনি যোগ করেছেন, ‘পিট, তুমি কংগ্রেসে যাও, তাদের এটা জানাও। তারা কী করবে? বলবে—আমরা চাই না যে আমাদের দেশে মাদক ঢোকা বন্ধ হোক?’

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘স্থলভাগের মাদকচক্রের জন্য এটা হবে আরও বিপজ্জনক। খুব শিগগিরই আপনারা সেটা দেখবেন। এভাবেই ব্যাপারটা এগোচ্ছে।’

স্থলভাগে লক্ষ্যে আঘাত করলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়বে। গত সেপ্টেম্বরেই ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ১৫ হাজার সেনা মোতায়েনের পর আরও পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়ে অনির্দিষ্টকাল মোতায়েনের নির্দেশ দেন—এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নৌ-হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

লাতিন আমেরিকায় মার্কিন যুদ্ধজাহাজের বহর—এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্পকে আরেকটি প্রশ্ন করা হয়: তিনি কি মাদকচক্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘সেটার প্রয়োজন দেখছি না। আমরা শুধু তাদের মেরে ফেলব যারা আমাদের দেশে মাদক আনছে—ঠিক আছে? আমরা তাদের মেরে ফেলব, তারা লাশ হবে, একেবারে লাশ।’

এটির আগে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানে দুই দশক যুদ্ধ চালায়; ইরাকে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’ থাকার অভিযোগে হামলা চালানো হয়েছিল। এবার ভেনেজুয়েলার তথাকথিত মাদকচক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে দেশটিতে হামলার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প।

সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক উপস্থাপক মাদুরোকে প্রশ্ন করেন, ‘মেরিন বাহিনী এসে আপনার সরকার পতন ঘটাবে’—এমন শঙ্কা নিয়ে তাঁর মত কী। জবাবে মাদুরো বলেন, ভেনেজুয়েলার ৯০ শতাংশ মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হুমকি প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেনেজুয়েলাবাসী আমাদের আইন মেনে চলি, এই ভূমিকে কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।’

মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের মাদক পাচারের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন, প্রতিবেশী কলম্বিয়ার মতো কোকো চাষ বা কোকেন উৎপাদন ভেনেজুয়েলায় নেই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তারা এখন ধ্বংস করতে চাওয়া দেশগুলোকে আর কমিউনিস্ট বলে না। সোভিয়েত আমলে সেটাই ছিল অভিযোগ। পরে তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়াকে সন্ত্রাসী বলে অভিযুক্ত করেছিল। এখন নতুন অদ্ভুত অভিযোগ হলো— মাদক পাচার।’

এ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে প্রায় ছয়টি নৌকায় হামলা চালিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। এসব হামলার পর ওয়াশিংটনে ভেনেজুয়েলার স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার প্রস্তুতি নেওয়ার জল্পনা বেড়েছে।

কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকায় আঘাত করলে বিমান হামলার ক্ষেত্র ক্যারিবীয় সাগর ছাড়িয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হলো। গত সপ্তাহে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছেন। তাঁর দাবি—মাদুরো সরকার তাদের কারাগার খালি করে বন্দীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে এবং উত্তরমুখী মাদক চোরাচালানকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

dainikamarbangla

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ