গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে এক দম্পতিও রয়েছে। শুক্রবার রাতে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. মিজান, যিনি কেটু মিজান নামেও পরিচিত, তাঁর স্ত্রী গোলাপি, মো. স্বাধীন এবং আল–আমিন। পুলিশ জানায়, “সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে।” ওই চারজনই ছিনতাইকারী দলের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনার আগে, বৃহস্পতিবার রাতেই গাজীপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আরও পাঁচজনকে আটক করেছিল।
৩৮ বছর বয়সী আসাদুজ্জামান তুহিন 'দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ'–এর গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁকে বৃহস্পতিবার রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, “আসাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ পরই স্থানীয় একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়।” ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত করা হয়। এরপর, তিনটি পৃথক দল গঠন করে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়।
শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকা থেকে মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান এবং তাঁর স্ত্রী গোলাপিকে গ্রেপ্তার করে একটি দল। অন্যদিকে, স্বাধীনকে গাজীপুর শহরের পাশে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকা থেকে আল–আমিনকে আটক করা হয়।
আসাদুজ্জামান তুহিনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে হলেও তিনি পরিবারসহ গাজীপুর নগরের চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে, প্রায় আটটার দিকে, পাঁচ থেকে ছয়জন সশস্ত্র হামলাকারী তাঁকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ধাওয়া করে। তিনি দৌড়ে ঈদগাহ মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেন। তবে হামলাকারীরা দোকানের ভিতর ঢুকে তাঁকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তাঁর মৃত্যু হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরদিন শুক্রবার সকালে নিহত তুহিনের বড় ভাই সেলিম একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান প্রথম আলোকে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।”