টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি সমাবেশে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অংশগ্রহণ করানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের ঐতিহ্যবাহী বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পাঠদানের সময় ক্লাসরুম থেকে তাদের জোর করে এনসিপির সমাবেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার বিরুদ্ধেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয় বিক্ষোভ মিছিলটি, যেখানে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বর্তমান শিক্ষার্থী সাইফুল বারী এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা তানজিল আহমেদ ও সজিব আহমেদসহ আরও অনেকে।
১০ম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল বারী বলেন, “এনসিপির নেতারা আমাদের স্কুলে এসে ক্লাসরুমে প্রবেশ করেন এবং কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই শিক্ষার্থীদের সমাবেশে নিয়ে যান। তারা দাবি করেন, এটা অরাজনৈতিক আয়োজন, কিন্তু পরে দেখা যায় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কার্যক্রম। এতে শিক্ষকদের সঙ্গে নেতাদের কথাকাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠান ছুটি দিতে বাধ্য হয়। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
প্রাক্তন শিক্ষার্থী তানজিল আহমেদ বলেন, “গতকালের ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। যারা ছাত্রদের জোর করে রাজনৈতিক সমাবেশে নিয়ে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির টাঙ্গাইল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেল বলেন, “আমাদের কেন্দ্রীয়ভাবে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল না। তবে যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমরা বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। এনসিপির পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনায় শিক্ষার্থীদের জড়ানো হবে না। একইসঙ্গে আমরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কাছেও দুঃখ প্রকাশ করেছি।”
উল্লেখ্য, এনসিপি তাদের 'জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকালে শহরের শামছুল হক তোরণ থেকে একটি মিছিল শুরু করে, যা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিরালা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র সদস্য সচিব সারোয়ার নিভা এবং ডা. তাজনুভা জাবিনসহ আরও অনেকে।
