হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা
মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের অন্যতম শর্ত হলো পরিচ্ছন্নতা। একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে হাত ধোয়ার অভ্যাস এবং নিজের দৈনন্দিন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, তাকে বহু রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। আজকের আধুনিক যুগে, যখন সংক্রামক রোগের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তখন হাত ধোয়া এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।
হাত ধোয়ার গুরুত্ব:
হাত হলো জীবাণু সংক্রমণের প্রধান বাহক। প্রতিদিন আমাদের হাত নানা জিনিস স্পর্শ করে, যেমন দরজার হ্যান্ডেল, টাকা, মোবাইল ফোন, খাবার ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমে নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া আমাদের হাতে আসে। যদি হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া হয় কিংবা চোখ-মুখ স্পর্শ করা হয়, তবে তা সহজেই শরীরে প্রবেশ করে নানা ধরনের অসুখ সৃষ্টি করতে পারে, যেমন:
-
ডায়রিয়া
-
সর্দি-কাশি
-
ফ্লু
-
কোভিড-১৯
-
হেপাটাইটিস এ
-
পেটের পীড়া
কখন হাত ধোয়া উচিত:
-
খাবার খাওয়ার আগে ও পরে
-
টয়লেট ব্যবহারের পর
-
বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর
-
শিশু বা অসুস্থ ব্যক্তিকে স্পর্শ করার আগে ও পরে
-
হাঁচি, কাশি বা নাক পরিষ্কার করার পর
-
পশুপাখি বা ময়লা জিনিস স্পর্শ করার পর
সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতি:
১. হাতকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হবে।
২. সাবান (হাত ধোয়ার সাবান বা লিকুইড) প্রয়োগ করে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ঘষতে হবে।
৩. হাতের তালু, পিঠ, আঙুলের ফাঁক, নখ ও কবজি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
৪. পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫. শুকনো ও পরিষ্কার তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে হাত মুছে ফেলতে হবে।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা:
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মানে নিজের শরীর, পোশাক ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা। এতে রোগ-জীবাণু দূরে থাকে এবং দেহ মন সুস্থ থাকে।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:
-
নিয়মিত গোসল করা
-
দাঁত ব্রাশ করা (সকাল ও রাতে)
-
পরিষ্কার জামাকাপড় পরা
-
নখ ও চুল নিয়মিত কাটা
-
পরিষ্কার ও শুকনা জায়গায় থাকা
-
জুতা-স্যান্ডেল পরিষ্কার রাখা।
হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা কেবল ব্যক্তির নিজের স্বাস্থ্যের জন্য নয়, সমাজের সবার কল্যাণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে কার্যকর একটি উপায়। তাই, ছোটবেলা থেকেই এ অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। “পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ” – এই মহান উক্তি যেন আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রতিফলিত হয়।