মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা হলো গর্ভাবস্থা, প্রসব ও প্রসবোত্তর সময়ের সকল স্বাস্থ্যসেবা। এটি মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা নিলে গর্ভকালীন জটিলতা ও মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কমানো যায়।
মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব:
গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। এই সময় সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যার অভাব নানা ধরনের জটিলতা তৈরি করতে পারে যেমন:
-
গর্ভপাকস্থলীর সমস্যা
-
উচ্চ রক্তচাপ ও প্রসববিরতি
-
পুষ্টিহীনতা
-
ইনফেকশন
-
জন্মগত ত্রুটি
সুতরাং, মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা করে, সুস্থ শিশুর জন্ম নিশ্চিত করে এবং মায়ের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়।
মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার ধাপসমূহ:
১. গর্ভধারণের পূর্বপরিকল্পনা:
গর্ভধারণের আগে মা ও পিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা সম্পন্ন করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পরামর্শ গ্রহণ।
২. নিয়মিত প্রেগনেন্সি চেকআপ:
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চেকআপ করা উচিত। এতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
৩. সুষম পুষ্টি:
গর্ভবতী মায়ের জন্য সুষম, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যেমন: প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলেট ইত্যাদি।
৪. টিকা গ্রহণ:
গর্ভাবস্থায় ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন টিকা যেমন টিটানাস টিকা নেওয়া জরুরি।
৫. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ব্যায়াম:
গর্ভবতী মায়ের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং হালকা ব্যায়াম করা ভালো।
৬. মানসিক স্বাস্থ্য:
মাতৃত্বকালীন সময়ে মানসিক চাপ কমানো এবং পারিবারিক সহায়তা মায়ের জন্য খুবই জরুরি।
৭. প্রসবকালীন প্রস্তুতি:
ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর নির্দেশে প্রসবের প্রস্তুতি নেওয়া ও হাসপাতালে সময়মতো যাওয়া।
৮. প্রসবোত্তর যত্ন:
প্রসবের পর মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুষ্টি এবং বিশ্রামের যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা মায়ের জীবন রক্ষা ও শিশুর সুস্থ জন্মের জন্য অপরিহার্য। সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ এবং যত্ন নিলে গর্ভাবস্থার জটিলতা অনেকাংশে এড়ানো যায়। তাই পরিবার, সমাজ ও সরকার একযোগে কাজ করে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।