logo
ads

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্গঠন যে কারণে জরুরি

ফরহাদ মজহার, লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট

প্রকাশকাল: ২১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৫৩ এ.এম
বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্গঠন যে কারণে জরুরি

ছবি: যাপ্র

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির হৃদপিণ্ড, ডাকসু নির্বাচন আসছে। বাংলাদেশকে নতুন করে গড়া মানে শিক্ষাকে শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে তৈরি ও হাজির করতে পারা। ডাকসু নির্বাচন তাই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা কী, গণঅভ্যুত্থান কী, রাষ্ট্র কী ইত্যাদি শেখে না, উল্টো কিভাবে গোলাম হয়ে বেঁচে থাকতে হয় সেটা ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শেখে। নিজেদের স্বাধীন সত্তার বিপরীতে কিভাবে ফ্যাসিস্ট বা জালিম রাষ্ট্র ব্যবস্থার গোলাম থাকতে হয় সেটাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শেখে। এই অবস্থার বদল দরকার।

অবাক লাগে, উনসত্তর কিম্বা নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে কোনো পর্যালোচনামূলক গবেষণা বা একাডেমিক আলোচনা আমরা দেখি না। আমাদের কি কোনো ইতিহাস বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ইত্যাদি নেই? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কী বা কেন এবং কিভাবে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র কায়েম করতে হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কিছু শেখাতে পারে না। যে শিক্ষা আমাদের গোলাম করে রাখে, তা দিয়ে আমরা কী করব?

একটু ভাবতে বলি: হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি, বরং পাকিস্তানি সেনার পক্ষে ছিলেন। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি সেনাপ্রধান এবং পরে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এ ধরনের প্রকট বৈপরীত্যে এবং বিপরীত ইতিহাসের দোষে দুষ্ট। একে কেবল জনগণের "রাজনৈতিক চেতনার অভাব" বলা যায় না—বরং বাংলাদেশকে বুঝতে হলে পুরনো ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রযন্ত্রের ধারাবাহিকতা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতা, আমলাতন্ত্র, সামরিক শক্তির প্রভাব, পরাশক্তির আধিপত্য—ইত্যাদি নানা দিক থেকে পর্যালোচনা করতে হবে। সর্বোপরি বুঝতে হবে কেন বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কিছুই শেখাতে পারে না। দরকার বিশ্ববিদ্যালয় পুনর্গঠন। ডাকসুর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বাংলাদেশ গঠনের রাজনীতি শক্তিশালী করতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

এই বিভাগের আরও খবর

dainikamarbangla

বিশেষ সংবাদ