logo
ads

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ও জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানাল বিএনপি

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশকাল: ৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:০৩ পি.এম
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ও জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানাল বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ এবং জুলাই ঘোষণাপত্রে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক তাৎক্ষণিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এ প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, “আজকে ৫ আগস্ট ২০২৫। এক বছর আগে এই দিনেই আমরা ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছিলাম। হাজারো ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশে। এই ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশ বিগত ১৬ বছরের অবিরাম সংগ্রাম এবং যারা রক্তদান করেছেন বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। তাদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।”

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে সালাহউদ্দিন বলেন, “বিগত ২০২৪ এর জুলাই আগস্টের ছাত্র গণ অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের সকলের প্রতি সমবেদনা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।”

জাতীয় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় বিএনপির অবদান ও অংশগ্রহণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকের এই দিনে আমাদের বিশাল অর্জন...আমরা দীর্ঘ এক বছর যাবত বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারের জন্য...আমরা সংস্কার কমিশনগুলোর সাথে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় যে সংস্কার রাষ্ট্র কাঠামো তার একটা পর্যায়ে ঐক্যমতে উপনীত হয়েছি।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “সেটা আশা করি খুব শীঘ্রই ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্বাক্ষরিত হবে এবং আশা করি সেটা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও যদি আলাপ আলোচনা হয় সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করব। তার মধ্য দিয়ে জাতির যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যবদ্ধ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আগে, সেটাকে আমরা সমুন্নত রাখবো এবং এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আমরা শক্তিতে পরিণত করে এই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আজকে প্রধান উপদেষ্টা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। একটি জুলাই ঘোষণাপত্র, আরেকটি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা দুটোকেই স্বাগত জানাই।”

তিনি বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের যে সমস্ত ঘোষণা রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যথাযোগ্য জায়গায় সংবিধানে সেটা স্থাপন করা হবে সেই প্রতিশ্রুতি আমরা আগেও দিয়েছিলাম এবং জুলাইয়ের যোদ্ধাদের, জুলাই শহীদদের, ছাত্রগণ অভ্যুত্থানের যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়াটা সমুচিত হয়েছে সেটা আমাদের প্রাণের দাবি।”

গণআন্দোলনে আহতদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা আহত হয়েছেন, যারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে আইনি সুরক্ষা সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি...তিনি যেমন দিয়েছেন, সারা জাতি দিয়েছে, আমরাও দিচ্ছি।”

নির্বাচনের পরিবেশ গঠনে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার প্রশংসা করে সালাহউদ্দিন বলেন, “আগামী দিনে আমাদের নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য যে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যে সমস্ত পরামর্শ দিয়েছেন, সেটা অবশ্যই পরিধানযোগ্য। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি চিঠি পাঠাবেন। আগামী ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রমজান শুরু হওয়ার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। অবশ্যই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবেন যথাসময়ে।”

তিনি আরও বলেন, “কিন্তু মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আজকে যেই নির্দেশনা দিয়েছেন, তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবং চিঠি প্রদান করবেন নির্বাচন কমিশনকে যা বলেছেন, সেই ঘোষণার জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করছিলাম এবং পুরো জাতি অপেক্ষা করছিল। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যে একটি দোদুল্যমানতা ছিল বলে অনেকে মনে করছিলেন, তাদের মধ্যে সেই দুদুল্যমানতাটা রইল না।”

আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “পুরো জাতি একটি নির্বাচনমুখী পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাবে এবং সেই নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি হবে। আগামী দিনের নির্বাচন ইনশাআল্লাহ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ এবং বিশ্বের মধ্যে সবচাইতে প্রশংসিত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে বলে আমরা আশা করি এবং সেই লোককে, সমগ্র জাতিকে এবং সমস্ত জনগণকে প্রস্তুত নেয়ার জন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকেও আহ্বান জানাচ্ছি।”

রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরো বেশি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কোন রকমের কোন অনিশ্চিত পরিবেশ বা ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগে আর থাকবে না, সবকিছুই সচল হবে এবং গতিশীলতা পাবে — আমরা এটাই আশা করি।”

এই বিভাগের আরও খবর

dainikamarbangla

বিশেষ সংবাদ