শিশুরা সমাজের ফুল, ভবিষ্যতের ভিত। অথচ আজ আমরা শিশুদের প্রতিই যেন সবচেয়ে বেশি নিষ্ঠুর। কোথাও শিশু অপহরণ, কোথাও যৌন নির্যাতন, আবার কোথাও পরিবারের মধ্যেই তাদের প্রতি পাষণ্ডতা। এই চিত্র কেবল সামাজিক অধঃপতনেরই নয়, বরং আমাদের মানবিকতাবোধের চরম সংকটের প্রমাণ।
ইসলাম শিশুদের প্রতি স্নেহ, মমতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ়। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন শিশুদের প্রকৃত অভিভাবক ও ভালোবাসার প্রতীক। তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতেন, আদর করতেন, নাম ধরে ডাকতেন।
যারবী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ একজন বয়স্ক লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে আসে। লোকেরা তার জন্য পথ ছাড়তে বিলম্ব করে। (তা দেখে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে লোক আমাদের শিশুদের আদর করে না এবং আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (তিরমিজি, হাদিস: ১৯১৯)
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত অপর হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘‘শুধুমাত্র হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর ও দুর্ভাগা মানুষের কাছ থেকেই রহমত ছিনিয়ে নেয়া হয়।” (তিরমিজি, হাদিস : ১৯২৩)
শিশুদের সঙ্গে উদার, কোমল ও ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ কেবল মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইসলামের শিক্ষা হলো—শিশুদের চোখের পানি নয়, হাসি এনে দাও।
আজ যদি আমরা নবীর (সা.) সুন্নাহ অনুযায়ী শিশুদের প্রতি মমতা প্রদর্শন করি, তাহলে সমাজে সহিংসতা কমবে, পরিবারে শান্তি আসবে এবং আল্লাহর রহমত লাভ করাও সহজ হবে।
তাই আসুন, আমরা শিশুর প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা ও সংবেদনশীল আচরণে মনোনিবেশ করি। তাদের প্রতি নিষ্ঠুরতার পরিবর্তে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিই। এর মাধ্যমে আমরা এই পৃথিবীতে মানবিকতা ফিরিয়ে আনতে পারি, এবং আখেরাতে মহান প্রতিদান লাভ করতে পারি।