আগামী নির্বাচন যদি সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত না হয়, তাহলে দেশ এক ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তার মতে, একটি দলকে নিয়ে ‘ক্ষমতায় আসছে’— এমন প্রচারণা ভবিষ্যতে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও ভোটারদের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাই গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত। নির্বাচনে এ দলটি অংশগ্রহণ করলে গণরোষ সৃষ্টি হবে, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।” তিনি আরও বলেন, “আগামী নির্বাচনকে ঘিরে গৃহযুদ্ধের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। নির্বাচনে অনিয়ম হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারলে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হবে।”
বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সমালোচনা করে মঞ্জু বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নির্বাচনের টোটাল সিস্টেমই দুর্নীতিগ্রস্ত করা হয়েছে। প্রচলিত আসনভিত্তিক ভোট পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছে।” তিনি পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিকে সমর্থনযোগ্য উল্লেখ করলেও জানান, এতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই তিনি একটি মিশ্র পদ্ধতির প্রয়োগের পক্ষে মত দেন।
তিনি আরও জানান, “আগামীতে সরকারি দল ও বিরোধী দল মিলে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে— এটি একটি বড় অর্জন। এর ফলে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হবে এবং তাদের সক্ষমতা বাড়বে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার আশঙ্কা দূর করতে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী রোজার আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।”
তিনি আরও মন্তব্য করেন, “পরাজিত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী বিদেশে অফিস খুলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চেষ্টা করছে।” তার মতে, “১/১১ বা গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা অমূলক”, এবং তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কোনো নির্বাচন পদ্ধতিতে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি এবং জুলাই সনদে তাদের স্বাক্ষর করা নিয়ে আমি শঙ্কিত।” তবে তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সব পক্ষকে কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান।
এদিনের ছায়া সংসদে ঢাকা কমার্স কলেজকে পরাজিত করে বিজয়ী হয় ঢাকা কলেজের বিতার্কিক দল।