নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ১৪৫টি দল নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল। তাদের মধ্যে ৬৫টি দল প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের ধাপে বাদ পড়ছে।
কারণ, নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ১৫ দিনের সময়সীমার মধ্যেও এসব দল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ ৮০টি দল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়েছে। রোববার (৩ জুলাই) শর্ত পূরণের সময় শেষ হওয়ার পর এ তথ্য জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “নিবন্ধনের জন্য মোট ১৪৫টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। তবে কেউই শুরুতে শতভাগ তথ্য দিতে পারেনি। ফলে কমিশন থেকে সব দলকে চিঠি দিয়ে ঘাটতি পূরণের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮০টি দল তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়, কিন্তু বাকিরা তা না করায় তাদের আবেদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আইন অনুযায়ী অতিরিক্ত সময়ের কোনো সুযোগ নেই। যে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল, সেটিই চূড়ান্ত। সেক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের পর নতুন করে সময় বাড়ানোর সুযোগও নেই। কমিশন আইনি কাঠামোর মধ্যেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
নির্বাচন কমিশনের সূত্রে আরও জানা গেছে, নিবন্ধন পেতে হলে একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থাকতে হয়, সঙ্গে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় কমিটি এবং ১০০টি উপজেলায় ২০০ জন ভোটারের সমর্থনে কমিটি থাকতে হয়। কেউ যদি আগে সংসদ সদস্য হয়ে থাকেন অথবা গত নির্বাচনে জাতীয় পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকেন, তাহলেও নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হন।
২০০৮ সালে প্রথম রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রথা চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৫৫টি দল নিবন্ধন পেয়েছে। তবে শর্ত না মানা ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি। জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা আদালতের আদেশে নিবন্ধন ফেরত পেলেও নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল জামায়াতের নিবন্ধনই পুনর্বহাল করেছে।
নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপে আবেদন যাচাই-বাছাই করে নির্বাচন কমিশন। এরপর মাঠপর্যায়ে সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হয়। প্রয়োজনে আপত্তির সুযোগ দিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের প্রতীকে প্রার্থী দিতে পারে না।