২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৩ এ.এম

সাভারে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

সাভারে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা কয়েক দফায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে; তাঁদের মধ্যে একজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত জানা যায়, সন্ধ্যায় ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেলের সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুতু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে গিয়ে পড়ে। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের একটি বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হলে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়।

রাত ১২টার পর পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর চালান। এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনে হামলা করে লুটপাট চালান, কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নষ্ট করেন এবং তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া আরও পাঁচটি যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হয়। ভোররাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে আগুন দেখা গেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চালাতে থাকে। উত্তেজনার একপর্যায়ে কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

সাভার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”