অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় শনিবার 'এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে অংশগ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। বিশ্ববাসী দেখেছে আমরা বিপ্লব পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনায় ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামী দিনেও আমরা দেশের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ থাকবো।”
ড. ইউনূসের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “ড. ইউনূস দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। দুনিয়াজোড়া তার সুনাম। তিনি দেশকে একটি কাঙ্ক্ষিত মানে দেখতে চান। এটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানেরও চাওয়া ছিলো। আমি ড. ইউনূসের মাঝে আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই।”
তিনি আরও বলেন, “আর ৫ মাস পর দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে যারাই সরকার গঠন করবে, তারাও এভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে আশা করি।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে সফররত বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বলেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তিনি জানান, “রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।” তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, “বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হচ্ছে।” একই সঙ্গে তিনি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটদানের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন।
অনুষ্ঠানে 'ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট' শীর্ষক একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়, যা সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ আরও দুইজন বিশিষ্ট আলোচক।
আবেগঘন বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য-সচিব আখতার হোসেন। তারা অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
পরে 'শেপিং টুমোরো: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ' শীর্ষক আরেকটি প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা তাসনিম জারা, বিএনপির হুমায়ুন কবির এবং জামায়াত নেতা নাকিবুর রহমান।