ছাত্রলীগ নেতা হলেন ছাত্রদলের সভাপতি

রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের কমিটি, সভাপতি হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগকর্মী তাহমিদ আলম সফি

রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছয় সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তাহমিদ আলম সফি, যিনি অতীতে ছাত্রলীগ ও বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

২০২৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরে এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাঈম তোহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাজিদুল হক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাবিত তাবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাবিলা ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফা ফারদিন।

তথ্য যাচাই করে জানা গেছে, কমিটির ছয় সদস্যের মধ্যে পাঁচজনই ইন্টার্নশিপের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। একমাত্র ব্যতিক্রম সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাবিত তাবি, যিনি বর্তমানে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।

কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি তাহমিদ আলম সফির অতীতে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে অনুমোদিত কক্সবাজার জেলা শাখার কমিটিতে তিনি সমাজসেবা সম্পাদক পদে ছিলেন। এছাড়া ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে—শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রলীগের প্রচারণা চালানোয় সক্রিয় ভূমিকা ছিল তার।

তবে এ বিষয়ে তাহমিদ সফির ব্যাখ্যা, “আমার মননে সবসময় ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী আদর্শ কাজ করেছে।” তিনি দাবি করেন, তার পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য বিএনপির সঙ্গে যুক্ত। “আমার বাবা সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কলেজ জীবনে জোরপূর্বক নাম যুক্ত করে আমাকে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদে নেওয়া হয়েছিল,”—যোগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের কোনো কার্যকর কমিটি নেই। প্রায় এক বছর দুই মাস আগে জেলা কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর থেকে এ পর্যায়ে শূন্যতা বিরাজ করছে।

অন্যদিকে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ২০২৫ সালের ২৯ আগস্ট থেকে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সকল রাজনৈতিক এবং ক্লাবভিত্তিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদল থেকে নতুন কমিটি গঠন করা হয় এবং ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান বলেন, “মেডিকেল কলেজের কমিটিগুলো সরাসরি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল দেখে। তবে তাহমিদ সফির বিষয়ে বিতর্ক থাকায় আমি তাকে ফুল দেওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছি।”

এই কমিটি অনুমোদনের পর রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চলা অবস্থায় তা নিয়ে কক্সবাজারে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।