১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যমে 'শোকগাথা' শিরোনামে পোস্ট দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের একাধিক পরিচিত মুখ। ছাত্র-জনতা অভিযোগ তুলেছে—এই তারকারা সাংস্কৃতিকভাবে ফ্যাসিবাদী শাসনকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে নায়ক শাকিব খান ও অভিনেত্রী জয়া আহসানের পোস্ট ঘিরে ক্ষোভ আরও বিস্ফোরিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত হয় “কালচারাল ফ্যাসিস্টদের প্রতীকী জুতাপেটা” কর্মসূচি। সেখানে একটি ব্যানারে বিনোদন অঙ্গনের বিভিন্ন তারকা, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীর ছবিতে প্রতীকীভাবে জুতা মারা হয়।
ব্যানারে থাকা তারকাদের মধ্যে ছিলেন—সঞ্চাল চৌধুরী, শমি কায়সার, শম্পা রেজা, জয়া আহসান, শামিম (মনা), জাহের আলভি, অরুণা বিশ্বাস, নাজিফা তুষি, সাজু খাদেম, মুমতাহিনা টয়া, সুনেরাহ বিনতে কামাল, পিয়া জান্নাতুল, আরশ খান, খায়রুল বাশার, ইরফান সাজ্জাদ, শাকিব খান, স্বাধীন খসরু, কচি খন্দকার এবং মেহের আফরোজ শাওন।
তালিকায় সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন শাহেদ আলম, আব্দুন নূর তুষার, জ. ই মামুন, আনিস আলমগীর, ফারাবী হাফিজ। এছাড়া লেখক সাদাত হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, সংগীতশিল্পী রাহুল আনন্দ, ব্যান্ডদল আর্টসেলের লিংকন ও নাট্যকার সুমন আনোয়ার-এর ছবিও ব্যানারে প্রদর্শিত হয়।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ—এই তারকারা বছরখানেক আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় কিছু সময়ের জন্য বিপ্লবের পক্ষে অবস্থান নিলেও, বর্তমানে তারা বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন; এমনকি ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতি এক ধরনের নীরব সম্মতি জানাচ্ছেন।
১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে তারা যে পোস্ট ও ছবি শেয়ার করেছেন, সেগুলোকে “ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতি সহানুভূতি” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজ।
এই ঘটনায় ‘জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠন এক ফেসবুক পোস্টে জানায়— “ফ্যাসিস্টদের দোসর যে সব তারকারা আজকে (১৫ আগস্ট) শোক দিবস পালন করেছে, তাদেরকে উত্তরায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো। উত্তরায় তাদের শুটিং করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরার ছাত্র-জনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি।”
উল্লেখ্য, রাজধানীর উত্তরায় রয়েছে দেশের অন্যতম বড় শুটিং হাব, যেখানে প্রচুর নাটক ও বিজ্ঞাপনের শুটিং হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রভাব হতে পারে বিনোদন অঙ্গনের কর্মপ্রবাহে।
ছাত্র-জনতা বলছে, “শোকের নামে যারা ফ্যাসিবাদকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তারা জনগণের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন।” সামাজিক মাধ্যমে এখন এই তারকাদের বিরুদ্ধে চলছে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া, যেখানে তাদেরকে “সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্ট” বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।