১৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৬ এ.এম

বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটগুলোতে সাইবার হামলা

বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটগুলোতে সাইবার হামলা

বাংলাদেশের বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কিছু সংস্থার ওয়েবসাইটে বড় ধরনের সাইবার হামলা হয়েছে। ‘ট্রোজান ১৩৩৭’ ও ‘দ্যা রেড ঈগল’ নামের দুটি হ্যাকার গ্রুপ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক হ্যাকার গ্রুপও যুক্ত ছিল বলে জানা যায়। 

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুর থেকে পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা শুরু হয়। বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপে হামলার ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছিল। টেলিগ্রামে হ্যাকাররা জানায়, তারা প্রায় ১০০টি ওয়েবসাইটে সফল হামলা চালিয়েছে এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের ঠিকানা প্রকাশ করেছে।

আক্রান্ত কিছু ওয়েবসাইট বর্তমানে অকার্যকর, আবার কিছু সাইটে হ্যাকারদের বার্তা দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর রূপনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে “হ্যাকড বাই লুসিয়ান ক্রাইজ” শিরোনামে ফিলিস্তিনের পক্ষে বার্তা এবং ইসরায়েলের মিত্রদের সম্পদে ধারাবাহিক হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। দারুস সালাম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘ট্রোজান ১৩৩৭’ গোষ্ঠী নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার পরিচয় দিয়ে জানায়, ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই হামলা চালানো হয়েছে।

এছাড়া, ‘দ্যা রেড ঈগল’ গোষ্ঠী এক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের দাবি করে এবং এর প্রমাণ হিসেবে কিছু স্ক্রিনশট প্রকাশ করে। তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও হামলার দাবি করে। তবে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর এসব ওয়েবসাইট স্বাভাবিকভাবে সচল দেখা যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই দুটি প্রতিষ্ঠানে দুর্বল ডিডস আক্রমণ চালানো হয়েছিল, যা দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আরিফ মঈনুদ্দীন বলেন, “এই আক্রমণগুলো মূলত ওয়েবসাইট ডিফেইসমেন্ট ধরনের, যেখানে হোমপেইজ বদলে হ্যাকাররা নিজেদের পরিচয় ও বার্তা প্রকাশ করে। তবে যেসব ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা দুর্বল, সেখানে ডাটাবেইজে প্রবেশ করে সংবেদনশীল তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।”

তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, আবেদনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যদি হ্যাকাররা এসব তথ্য দখল করতে পারে, তবে তা ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করার আশঙ্কা থাকে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সংস্থার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।