চাঁদা আদায়ের মামলায় গ্রেফতার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত নেতা জানে আলম অপুর সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের পর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। একই সঙ্গে, তার বিরুদ্ধে আনা চাঁদাবাজির অভিযোগকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কেবিনেট মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিষয়টা এখনও যেহেতু তদন্তাধীন আছে, অনুসন্ধান চলছে, তাই মন্তব্য করা উচিত না। তারপরেও যেহেতু আমার নাম স্পেসিফিকলি সেখানে এসেছে এবং আমার নামটা আসার পর আমি অবাকই হই।”
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, “জানে আলম অপুকে আমি চিনতাম যখন আমি ছাত্র অধিকার পরিষদে ছিলাম। ২০২২ সালে যখন আমরা ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তখন সেও ছাত্র অধিকার পরিষদ করত, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে সম্ভবত সে ছিল। তখন চিনতাম। কিন্তু গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের (গণঅভ্যুত্থান) পরে তার সঙ্গে আমার কখনও কথা বা দেখা হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরণের একটা অভিযোগ আসার পরে আমরা আবার আরেক জায়গা থেকে জানতে পারলাম আজকে কিছুক্ষণ আগেও আমি ক্যাবিনেট থেকে বের হয়ে দেখলাম যে একজন সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী পরিচয়ে। আমি খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি যে আসলে কী এই ঘটনা। তিনি দাবি করেছেন যে অপুকে গুম করে নিয়ে এই স্টেটমেন্ট আদায় করা হয়েছে জোরপূর্বক। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে এটা আসলেই অত্যন্ত শঙ্কাজনক।”
প্রসঙ্গত, রাজধানীর গুলশানে সাবেক একজন এমপির বাসায় চাঁদা আদায়ের ঘটনায় জানে আলম অপুর একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার পর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ৩৫ মিনিটের এই ভিডিওটি ধারণ করেন তিনি, যেখানে পুরো ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ভিডিওতে জানে আলম অপু বলেন, “গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় টাকার ব্যাগ নিতে যে ছেলেকে দেখেছেন, সেটা আমি। আপনার একটি ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছেন যে সমন্বয়করা চাঁদাবাজিতে জড়িত। যে সমন্বয়ক গত বছর ছিল মহানায়ক তারা হয়ে গেলো চাঁদাবাজ।”
তিনি আরও বলেন, “আমার কিছু প্রশ্ন আছে। আপনারা কি জানেন, ওইদিন ভোর ৫টায় ওই জোনের ডিসি-এসিকে অবগত করে একদম অফিসিয়াল প্রসেসে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শাম্মির (সাবেক এমপি) বাসায় আমরা অভিযান চালাই। আপনারা কি জানেন, সেই অভিযানে যাওয়ার আগে গুলশানের কোনো একটি জায়গায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আমার কথা হয়।”
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অপুর স্ত্রী আনিসা বলেন, “জুলাইয়ের ৩১ তারিখ রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত অপুকে বন্দি করে যে স্বীকারোক্তি নিল, এটা কারা নিল? আর গোপীবাগ কার বাসা? গোপীবাগ ইশরাক হোসেনের বাসা না?”
তিনি আরও বলেন, “অপুকে তো ইশরাক হোসেনের বাসার সামনে থেকেই ধরেছে। আর আপনারা দেখেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও-ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে, এগুলো সব ইশরাকের বাসায়ই।”