১১ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৪৩ এ.এম

আজ মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন ড. ইউনূস

আজ মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সোমবার তিনদিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। সফরকালে তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দুই দেশের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারকে সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সফরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ, জ্বালানি ও গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণসহ নানা খাতে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জনকূটনীতি) শাহ আসিফ রহমান এবং উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস সচিব জানান, “মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ১১ থেকে ১৩ আগস্ট দেশটি সফর করবেন ড. ইউনূস। সোমবার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “সেখানে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ যাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হবে। এছাড়া গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে সহযোগিতার জন্য মালয়েশিয়াকে অনুরোধ জানানো হবে।”

তিনি জানান, সফরকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন প্রধান উপদেষ্টা। শফিকুল আলম বলেন, “বৈদেশিক কর্মসংস্থানে মালয়েশিয়া আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সফরের মাধ্যমে দেশটি যেন বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক জনশক্তি নেয়, সে চেষ্টা থাকবে। এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও চুক্তি হবে।”

সফরের দ্বিতীয় গুরুত্বারোপ করা বিষয় হলো বিনিয়োগ। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, “১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে আয়োজিত বিজনেস কনফারেন্সে প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেবেন।” একই দিনে কেবাংসাং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও সুলতান উপস্থিত থাকবেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “ওখানে গৃহযুদ্ধ চলছে, তাই রোহিঙ্গাদের যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। এ অবস্থায় তাদের সেখানে পাঠানো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরাপদ মনে করবে না। এ বিষয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে একটি বড় সম্মেলন হবে, যেখানে প্রায় ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। এছাড়া ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের পূর্ণ মনোযোগ রয়েছে। আমরা চাই তারা যেন নিজ বাসস্থানে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরতে পারে।”

আ.লীগের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে সরকার

বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়, কলকাতার উপনগরীতে একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে কার্যালয় খুলেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, “আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ব্যান্ড করা হয়েছে বাংলাদেশে। তারা বাইরে কী করছে, অবশ্যই আমরা মনিটরিং করছি। তারা যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে এমন কোনো অ্যাক্টিভিটিজ করে যে, আমাদের এখানে ইনস্টেবিলিটি ক্রিয়েট করতে চায়, অবশ্যই আমরা সেটা মনিটর করছি। এ বিষয়ে আরো কংক্রিট ইনফরমেশন পাওয়া গেলে আপনাদের জানাতে পারব।”

প্রতিটি কেন্দ্রে বডিওর্ন ক্যামেরা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে বডিওর্ন ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৪০ হাজার বডিওর্ন ক্যামেরা কেনার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রেস সচিব বলেন, “আমাদের মূল ফোকাস হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয় এবং বাংলাদেশের ভোটাররা যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এজন্যই বডি ক্যাম কেনা হচ্ছে।”