আবারও গুজব ছড়িয়ে এবং পরে সেই পোস্ট ডিলিট করেছেন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারত পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
সর্বশেষ রোববার (১০ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৭ আগস্টের একটি অস্ত্র হস্তান্তরের ঘটনার কিছু পুরনো ছবি শেয়ার করে তিনি গুজব ছড়ান। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জয় সেই ছবিগুলোর সঙ্গে লিখেন: "রাজধানীর খিলগাঁও থানা থেকে লুট করা অস্ত্র খিলগাঁও ইমানবাগ জামে মসজিদ থেকে উদ্ধার।”
কিন্তু প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন। ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট খিলগাঁও থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করে স্থানীয়রা একটি মসজিদে নিরাপদে রাখেন এবং পরে তা সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। এলাকাবাসীর এই সচেতন উদ্যোগের সময় তোলা ছবিগুলোই এখন নানা ভুয়া দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে।
বিশেষ করে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উত্থান হচ্ছে — এই প্রচারণার অংশ হিসেবে ছবিগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও আওয়ামী লীগ-সমর্থক এবং ইসলামবিদ্বেষী অনেকেই এই পুরনো ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর ও নেতিবাচক প্রচারণায় লিপ্ত।
এই ধরনের প্রচারণায় বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিদেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগপন্থী এবং ইসলামবিরোধী গোষ্ঠী। তাদের অন্যতম হলেন ভারতে নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। শনিবার (৯ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন:
“মসজিদের আসল কাজ নামাজ নয়, আসল কাজ সন্ত্রাস। আসল কাজ নামাজিদের জঙ্গি দীক্ষায় দীক্ষিত করা, জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র দেওয়া, মুক্তচিন্তকদের হত্যা করা।”
তিনি আরও লেখেন: “গত বছরের জুলাই আগস্ট মাসে থানার পুলিশদের জবাই করে জঙ্গিরা থানা লুট করে অস্ত্র এনে মসজিদে রেখেছে। এসব উদ্ধার হলো এক বছর পর। এক বছরে বাড়ি বাড়ি এত যে চুরি ডাকাতি ছিনতাই হলো, ওসবে তো এসব অস্ত্রই সম্ভবত ব্যবহার হয়েছে। মসজিদগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত।”
এছাড়াও তিনি লেখেন: “মসজিদের বিল্ডিংগুলোকে বিজ্ঞান ক্লাব, পাঠাগার, প্রেক্ষাগৃহ, নারী-অধিকার সংস্থা, গানের স্কুল, নাচের স্কুল, নাটকের স্কুল, মুক্তচিন্তা বিকাশ কেন্দ্র, মিউজিয়াম ইত্যাদি বানানো হোক। সমাজের মঙ্গল হবে।”
এটাই প্রথম নয়। এর আগেও মাইলস্টোনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পরদিন সচিবালয় ও মাইলস্টোন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সজীব ওয়াজেদ জয় গুজব ছড়ান।
সেদিন তিনি নিজের ফেসবুক পেজে লিখেন: “সচিবালয়ে পুলিশের গুলিতে একজন মারা গেছেন।”
কিছুক্ষণ পর উত্তেজনা সৃষ্টি ও গুজব ছড়ানোর দায়ে তিনি সেই পোস্টও মুছে ফেলেন।
এই দুটি ঘটনাই শুধু নয়—সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সজীব ওয়াজেদ জয় নিয়মিতভাবেই বিভিন্ন ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব ও উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে পরে তা মুছে ফেলার প্রবণতায় লিপ্ত হচ্ছেন।