১ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৫০ পি.এম

রংপুরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে

রংপুরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে উস্কানিমূলক তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং সন্তোষ শর্মার কালবেলাসহ কিছু গণমাধ্যম। সেইসঙ্গে ভারতীয় কিছু মিডিয়া এসব সংবাদকে হাতিয়ার করে বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় নেমেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা রঞ্জন কুমারের বাড়ি ভেবে তার চাচার বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। স্থানীয় এক পত্রিকায় বলা হয়েছে, শনিবার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে রঞ্জন কুমার নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।”

এই ঘটনার সময় উত্তেজিত জনতা আবেগপ্রবণ হয়ে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বলে জানা গেছে।

রঞ্জনের চাচী বলেন, “মেম্বার কল দিয়ে রঞ্জনের ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি জানান। পরে রঞ্জনকে নিয়ে থানায় যান তার চাচা। এরপরই রঞ্জনের বাড়ি ভেবে তাদের বাড়িতে কয়েক দফা হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা।”

অথচ প্রথম আলো তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, “সেদিনের হামলায় ২২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।”

এ বিষয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রঞ্জন কুমারের পোস্টকে কেন্দ্র করে একটি মাত্র বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে জনতা। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিপত্তি বাধে, যখন প্রশাসন সেই বাড়িটি মেরামতের জন্য টিন বরাদ্দ দেয়। ওই পরিবারকে টিন দেয়ার পর আরও চারটি পরিবার তাদের বাড়ির বেড়া ও টিনের চাল খুলে রাখে যাতে তারাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিন বরাদ্দ পায়।”

তিনি আরও দাবি করেন, “প্রথম আলো পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই সংবাদটিতে বানোয়াট তথ্য জুড়ে দেয়।”

শুধু তাই নয়, প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার জহির রায়হান ও কালবেলার রংপুর প্রতিনিধি রেজওয়ান রনি—দুজন মিলে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ তোলেন এবং তাকে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ নিয়ে ওসি আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে বাংলা এডিশনকে বলেন, “সাংবাদিক হয়ে তাদের এমন আচরণ দুঃখজনক।”

ঘটনার পর গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনায় এক হাজার ২'শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলার শুনানিতে গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল এমরান আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে দেশে ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এর আগে, লালমনিরহাটে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গং, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে ধর্মীয় দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল।