বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল পুনর্বিবেচনার দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষায় অংশ নিয়েও ফলাফলে অনুত্তীর্ণ চাকরিপ্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ে এক চিঠির মাধ্যমে এই আবেদন জানান তারা। পাশাপাশি, তারা ভাইভা দেওয়া সকল প্রার্থীকেই সনদ প্রদানের দাবি জানান।
চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, "আমরা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষা থেকে বৈষম্যমূলকভাবে বাদ পড়া চাকরিপ্রত্যাশী। অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি, ৪ জুন প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে চরম বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা এবং বিধিবহির্ভূতভাবে আমাদের ফেল করানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তা নিকট বারবার সমাধানের উদ্দেশ্যে গিয়েও আমরা রিক্ত হস্তে ফেরত এসেছি। যেখানে পিএসসির মত প্রতিষ্ঠান বিসিএস এর মতো পরীক্ষার ফলাফল পর্যন্ত বাতিল/পুনঃমূল্যায়ন করতে পারে সেখানে ২০ হাজার ৫৭৫টি প্রার্থীর পরিবারের সাথে হওয়া এত বড় বৈষম্য সমাধানে এনটিআরসিএর স্বেচ্ছাচারিতা প্রমাণিত হবার পরেও যথোপযোক্ত সমাধান পাবার জন্য আমাদের পুনরায় আপনার দ্বারপ্রান্তে আসতে হলো।"
তারা তাদের দাবিসমূহে উল্লেখ করেন:
১. এ বছর ভাইভার জন্য গঠিত বিভিন্ন বোর্ডে পাসের হারের তারতম্যের কারণ খুঁজে বের করে তার সুষ্ঠু সমাধান করা।
২. গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার কম হওয়ার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও সমাধান করা।
৩. সকল ভাইভা পরীক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করা।
৪. ফলাফল প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অসংগতি হয়ে থাকলে তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ভাইভা ফলাফল যথাযথভাবে পুনরায় পর্যালোচনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
ভাইভা থেকে বাদ পড়া প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রায় ২৩ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী এই প্রক্রিয়ায় ‘বৈষম্য ও জুলুমের’ শিকার হয়েছেন। তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, “অনেকে সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও ফেল করেছেন।”
তারা আরও জানান, ১৬তম ও ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা পরীক্ষায় পাসের হার ছিল যথাক্রমে ৯২.১৫ শতাংশ এবং ৯৫.২ শতাংশ। সেখানে ১৮তম নিবন্ধনের ভাইভায় পাসের হার কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭২ শতাংশে। অথচ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে শিক্ষকের শূন্যপদের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। ১৮তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার জন।
এর আগে গত ১১ জুন একই দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছিলেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।