৩১ জুলাই ২০২৫, ১০:০৮ পি.এম

গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার সেনাবাহিনীর

গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার সেনাবাহিনীর

গোপালগঞ্জে এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি)-এর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতায় সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বলে জানিয়েছেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্স পরিচালক কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জে শুধু ইট-পাটকেল নয়, ককটেলও ছোড়া হয়েছিল। তখন সেখানে জীবননাশের হুমকি ছিল। সে প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগ করেছে। তবে সেখানে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।”

কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় সমাবেশ করবে—সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী নেয় না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় সমাবেশ করবে, সে অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। আমাদের কাছে আগে থেকে কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না। গোপালগঞ্জে যা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি।”

ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “গোপালগঞ্জের ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি, তদন্তে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ পাবে।”

সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীর কাছে সবাই সমান। দায়িত্ব পালনে আমরা কখনো দলীয় বিবেচনায় কাজ করি না। যেখানে জনজীবন হুমকিতে থাকে, সেখানে আমরা সহযোগিতা করি। গোপালগঞ্জেও সেটাই করেছি। যদি আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব না পালন করতাম, তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।”

এনসিপিকে ভবিষ্যতে আর সহায়তা দেওয়া হবে না—এমন গুঞ্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী কাউকে বিশেষভাবে সহায়তা করে না। গোপালগঞ্জে জীবননাশের হুমকি ছিল বলেই সহায়তা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধুই জীবন রক্ষা।”

পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান সম্পর্কে কর্নেল শফিকুল বলেন, “চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা স্থানীয় ক্যাম্প থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছি এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী বেস তৈরি করে অভিযান চালানো হচ্ছে।”

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার বিষয়ে চলমান তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।”

মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে চাঁদাবাজি বা অন্যান্য অপরাধ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে আরও কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন। গ্রেপ্তার করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তরের পর আমাদের আর কিছু করার থাকে না।”