প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই একটি ফিচার থাকে, যার নাম এয়ারপ্লেন মোড বা ফ্লাইট মোড। নাম থেকেই বুঝা যায়, এটি মূলত বিমানে ব্যবহারের জন্য তৈরি। এর মাধ্যমে ফোনের সমস্ত ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক (মোবাইল সিগন্যাল, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস ইত্যাদি) সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যাতে ফোন থেকে বের হওয়া রেডিও সিগন্যাল বিমানের নেভিগেশন বা যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনো বিঘ্ন না ঘটায়।
তবে অনেকেই জানেন না, বিমানের বাইরে আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও এই ফিচারটি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী কাজে ব্যবহার করা যায়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক ফ্লাইট মোডের আরও কিছু বাস্তব ও কার্যকর ব্যবহার।
যেসব জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, সেখানে ফোন ক্রমাগত সিগন্যাল খোঁজার চেষ্টা করতে থাকে। ফলে ব্যাটারির দ্রুত ক্ষয় হয়। এই অবস্থায় ফোনে ফ্লাইট মোড অন করে রাখলে ফোন আর সিগন্যাল খোঁজার চেষ্টা করবে না, ফলে ব্যাটারির খরচও কমে যাবে।
আপনি যদি ফোন দ্রুত চার্জ করতে চান, তবে চার্জ দেওয়ার সময় ফ্লাইট মোড চালু করে দিন। এতে ফোন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকার চাপ মুক্ত থাকবে এবং চার্জিং গতিও ২০-২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
অনেকেই সন্তানদের হাতে গেম বা ইউটিউব ভিডিও দেখার জন্য ফোন দেন। এই সময় ফোনটি ফ্লাইট মোডে দিয়ে দিলে মোবাইল ডেটা ও কল বন্ধ থাকবে। ফলে বাচ্চারা ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে পারবে না এবং নিরাপদে নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবে।
সিগন্যাল না থাকলে ফোন অনেক সময় অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যায়। ফ্লাইট মোড চালু থাকলে ফোন আর সিগন্যাল খোঁজে না, ফলে ফোন ঠান্ডা থাকে এবং অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয় না।
পড়াশোনা, লেখালেখি বা কাজের সময় ফোনে ঘন ঘন কল বা মেসেজের কারণে মনোযোগ ভেঙে যায়। এই সময় ফোনে ফ্লাইট মোড চালু করলে নোটিফিকেশন, কল বা এসএমএস বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আপনি বাধাহীনভাবে কাজে মনোযোগ দিতে পারেন।
এটি অনেকের সাধারণ প্রশ্ন। উত্তর হলো—হ্যাঁ, যায়। ফ্লাইট মোড চালু করার পর আপনি চাইলে ম্যানুয়ালি ওয়াই-ফাই বা ব্লুটুথ চালু করতে পারবেন। এর ফলে আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন এবং হেডফোন বা অন্যান্য ডিভাইসের সঙ্গে ফোন কানেক্ট রাখতে পারবেন।
ফ্লাইট মোড শুধু বিমানের ভেতরে নিরাপদ থাকার জন্যই নয়, বরং এটি হতে পারে ব্যাটারি বাঁচানোর কৌশল, দ্রুত চার্জিংয়ের উপায়, বাচ্চাদের নিরাপদ ফোন ব্যবহারের মাধ্যম, এমনকি নিজেকে ডিজিটাল ডিস্ট্রাকশন থেকে রক্ষা করার সরঞ্জাম।
সঠিক সময়ে এই মোডটি ব্যবহার করলে আপনি আপনার ফোনের কার্যক্ষমতা এবং নিজের সময়—উভয়ই আরও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।