বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে আরেকটি স্মরণীয় দিন। মিরপুরে ঘরের মাঠে শক্তিশালী পাকিস্তানকে পরপর দুই ম্যাচে হারিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে টাইগাররা। সিরিজের একটি ম্যাচ বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলাদেশ, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের প্রথম পূর্ণাঙ্গ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।
গত মে মাসে পাকিস্তানের মাটিতে একই ধরনের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণভাবে জবাব দিল শান্ত-লিটনরা।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৩৩ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে পাকিস্তান থেমে যায় ১২৫ রানে। ৮ রানের উত্তেজনাপূর্ণ জয়ে গর্বের এক ইতিহাস গড়ে টাইগাররা।
বাংলাদেশের ইনিংসে শুরুটা ছিল ধীরগতি ও চাপপূর্ণ। ওপেনার নাঈম শেখ দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান মাত্র ৩ রানে। অধিনায়ক লিটন দাসও ব্যর্থ — ৯ বল খেলে করেন মাত্র ৫ রান। এরপর তাওহীদ হৃদয় রান আউট হয়ে ফেরেন ২ রানে। মাত্র ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে স্বাগতিকরা।
এই চাপ সামাল দেন পারভেজ ইমন ও শেখ মাহেদী হাসান। ইমন ১৩ রান করেন, মাহেদী কিছুটা ধৈর্য ধরে ২৫ বলে করেন ৩৩ রান। তবে ইনিংসের মূল ভরসা হয়ে ওঠেন জাকের আলী। শেষদিকে হাল ধরেন তিনি এবং ৪৮ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ইনিংসের শেষ বলে আউট হলেও তার ব্যাটেই দল পৌঁছে যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১৩৩ রানে।
লক্ষ্য ১৩৪ হলেও পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ শুরুতেই ধসে পড়ে। মাত্র ১৫ রানের মধ্যে তারা হারায় প্রথম পাঁচ উইকেট। শরিফুল ইসলাম ও তানজিম সাকিবের দাপুটে বোলিংয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় পাকিস্তান টপ অর্ডার।
শরিফুল নেন ৩ উইকেট, তানজিম ও মাহেদী হাসান দুজনেই নেন দুটি করে। রিশাদ হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান নেন একটি করে উইকেট।
তবে একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে যান ফাহিম আশরাফ। ৩২ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রিশাদের বলে ১৯তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৩ রান। দানিয়েল প্রথম বলেই চার মেরে আশার আলো দেখান, কিন্তু পরের বলেই ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। ১২৫ রানেই থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
এই জয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে নতুন ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ। এর আগে ছয়বারের দেখায় একমাত্র এক ম্যাচের সিরিজেই জয় এসেছিল টাইগারদের পক্ষে। এবার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ জিতে সেই অতীতকেও ছাপিয়ে গেল তারা।
এখন চোখ তৃতীয় ম্যাচের দিকে। সেটিতেও জয় পেলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করার বিরল কীর্তি অর্জন করবে বাংলাদেশ।