রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ব্যাপক প্রাণহানির পরদিন আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শনে আসেন প্রতিষ্ঠানটির আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। কলেজ ভবন ত্যাগের সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে উপদেষ্টারা কলেজের পাঁচ নম্বর ভবনের নিচতলার কনফারেন্স রুমে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রতিনিধি ও শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। এ সময় ভবনের বাইরে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেন।
শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি জানিয়েছেন—
নিহতদের সঠিক পরিচয় ও তালিকা প্রকাশ
আহতদের নির্ভুল তথ্য ও চিকিৎসার অগ্রগতি জানানো
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া
পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালু করা
এদিকে সকাল ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করলেও, দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে যেকোনো সভা-সমাবেশ, প্রতিবাদ বা জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, দিয়াবাড়ি গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের দলবদ্ধ কর্মসূচি পালন করা যাবে না।
অন্যদিকে, সকাল থেকেই কলেজ এলাকায় সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে নিখোঁজ সন্তান ও স্বজনকে খুঁজতে এসেছেন। হোস্টেলভিত্তিক শিক্ষার্থীদেরও হোস্টেল ত্যাগ করতে দেখা গেছে। বিমান বিধ্বস্ত ভবনের পাশের হায়দার আলী হোস্টেল থেকেও শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন।
সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। আজ সকাল পর্যন্ত নিহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে, এমন তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। এ ছাড়া চারটি ভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৭৮ জন।
কলেজ পরিচালক রাসেল তালুকদার জানান, এক নম্বর ভবনের নিচে একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে হতাহতদের তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। অভিভাবক ও স্বজনেরা সেখানে এসে তথ্য দিচ্ছেন ও নিচ্ছেন।